Copyright

Protected by Copyscape Duplicate Content Software You will copy with risks to penalties and criminal procedures.

Saturday, March 25, 2017

যোদ্ধা রাজকণ্যা (The Warrior Princess)

Recently, I purchased a copy of Thakurmar Jhuli again and I was surprised to discover the gender bias ingrained in the stories. The stereotypical rivalry between the queens, the princesses valued only for their beauty, the prince going out on adventures. I thought it was time my next generation had a different story. So, you may call it Pishimar Jhuli instead of Thakurmar Jhuli. In all fairness, Thakurmar Jhuli was first published in 1907 and the stories precede that. I’d like to think that there has been a significance change in the Bengali society since then and most of you are ready for a new hero. A hero irrespective of gender, a hero by the virtue of their personality traits and not for their pulchritude. I hope that both adults and children will enjoy this tale. Let me know what you think!

P.S. This story is NOT a criticism of current Bengali society. The author's note is merely a forethought about the scope and necessity of a retelling of our fairytales.

সম্প্রতি, আমি ঠাকুরমার ঝুলির এক কপি কিনেছি এবং গল্পগুলোতে কিছু লিঙ্গ-পক্ষপাতমূলক বদ্ধমূল ধারণা দেখে বিস্মিত হয়েছি। রাণীদের মধ্যে গতানুগতিক দ্বন্দ্ব, রাজকুমারীদের শুধুমাত্র তাদের সৌন্দর্যের জন্য মূল্যায়ন আর শুধুমাত্র রাজকুমারদেরই কাজ বুঝি দুঃসাহসিক অভিযানে বেরোনো? আমার মনে হয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা আলাদা রকমের গল্প লেখার সময় হয়েছে। তুমি এটাকে "ঠাকুরমার ঝুলি" না বলে "পিসিমার ঝুলি" বলতে পারো। সত্যি বলতে কি ঠাকুরমার ঝুলি তো ১৯০৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল এবং গল্প গুলো তারও আগের । আমার মনে হয় তখন থেকে বাঙালি সমাজে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছে এবং তোমাদের অধিকাংশই এক নতুন নায়কের জন্য প্রস্তুত; এমন নায়ক যে লিঙ্গ নির্বিশেষে, তার ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যে, শক্তি ও কর্মদক্ষতার জন্য নায়ক, সৌন্দর্য্যের জন্য নয়। আমি আশা করি প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুরা সবাই এই কাহিনী উপভোগ করবে। এ সম্পর্কে তোমার মতামত অবশ্যই জানিও !




যোদ্ধা রাজকণ্যা 

এক দেশে এক রাজা ছিল।তার দুই রাণী - সুয়ো রাণী আর দুয়ো রাণী। রাজার কোন ছেলেপুলে ছিল না বলে রাজার মনে খুব দুঃখ ছিল। একদিন তিনি খবর পেলেন যে পাশের জঙ্গলে এক মুনি এসে বিশ্রাম করছেন। তার কাছে রাজা-প্রজা সব সমান। যে তাকে তুষ্ট করতে পারবে তাকে বুক ভরে আশীর্বাদ দেবেন, আর যার ওপর রুষ্ট হবেন তার সাত বংশকে অভিশাপ দেবেন।  রাজা একদিন গিয়ে সেখানে নিজেই উপস্থিত হলেন।  গিয়ে দেখলেন ভুসো কালি মাখা, মাথায় জটা, বিদঘুটে একটা লোক গাছতলায় বসে ধ্যান করছে । আসে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু লোক তার জন্যে অপেক্ষা করছে। মুনি একে একে সবার নাম নিচ্ছেন আর তারা উঠে গিয়ে তার বেদির সামনে উপস্থিত হচ্ছে, তখন তিনি কারোর গাল টিপে, কারোর চুল টেনে কি সব বলছেন। 

রাজার পালা এলে, রাজা ভক্তি ভোরে হাত জোর করে গাছতলায় পৌঁছুলেন। মুনি বললেন- 'হুম! সন্তান চাই? নে, এই ফলটা দুই রাণীকে ভাগ করে খাইয়ে দিবি। মনে রাখবি, সমান ভাগ হয় যেন!'

রাজা ঘোড়া ছুটিয়ে রাজ্প্রাসাদ ফিরে গেলেন। আর সঙ্গে সঙ্গে অন্দরমহল গিয়ে দুই রাণীকে বললেন- এক্ষুনি এটা সমান ভাগ করে খাও!'

কিন্তু সুয়ো রাণী খুব হিংসুটে ছিল। সে ভাবলো-'দুয়ো আমার ছোট, আমার অধিকার বেশি!'
তাই সে ফলটার দু ভাগ করে বড় ভাগটা নিজে খেল আর দুয়ো রাণীকে ছোট ভাগটা দিল। 

কদিন পর রাণীদের ঘরে সন্তান হলো। সুয়ো রাণীর হল সূর্যের মত ফুটফুটে রাজপুত্র আর দুয়োরাণীর হলো চাঁদের মতো রাজকণ্যা । সবাই দেখে বলতে লাগলো রাজপুত্র কি সুন্দর রাজা হবে! আর রাজকণ্যার রূপের আঁচে সব জ্বলে যাবে!

কিন্তু রাজপুত্র বড় হয়ে ওর মার মতো হিংসুটে হয়ে উঠল। ও ভাবত বাবা খালি বোনকে ভালোবাসে। রাজকণ্যা  কিন্তু তার মার মতো সরল, মিশুকে আর মিষ্টি। দাদার পেটে যে এতো বিষ সে জানত না। 

রাজা দুই ছেলে মেয়েকে অস্ত্রশিক্ষা আর শাস্ত্রশিক্ষা দিতে লাগলেন। প্রজারা কেউ কেউ ভাবলো - বুড়ো রাজার ভীমরতি হয়েছে - মেয়ের হাতে কেউ অস্ত্র তুলে দেয় নাকি ? রাজা সেসব কানাঘুষোতে দৃকপাত করলেন না।


*
একদিন রাজা দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে শিকারে গেলেন। সারা দিন চলার পর, একটা খরস্রোতা নদীর ধারে শিবির করে বিশ্রাম নেবেন ঠিক হল । লোক লস্কর তাবু খাটাচ্ছে দেখে রাজকণ্যা নদীর পাশ ধরে হাঁটতে লাগল। হঠাৎ কার চিৎকার শুনতে পেয়ে সে দৌড়ে গিয়ে দেখল যে একটা রাখাল ছেলেকে একটা অতিকায় দানবের মতো কালো জীব জলের তলায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সে কিছু না ভেবেই সঙ্গে সঙ্গেই জলের মধ্যে ঝাঁপ দিল। ডুব সাঁতারে সেই অতিকায় দানবের ছায়ার পেছনে ধাত্তয়া করতে লাগল ।


বেশ খানিকটা গিয়ে যেখানে নদীর জলটা ঘন কালো- সূর্যের রশ্মি পৌঁছায় না, সেখানে সে একটা গহ্বর দেখতে পেল। সেই গহ্বর থেকে বিচ্ছুরিত আলোর আভা তার চোখে পড়ল। অন্ধকার বলেই হয়তো সেই মিত আলো এতো জোরালো মনে হচ্ছিল। সেখানে গিয়ে দেখল যে একটা বিশাল দৈত্যাকার মাছ ভাসছে। যেন ভাসতে ভাসতেই চোখ খুলে ঘুমোচ্ছে।  মাছের তো চোখের পাতা থাকে না তাই তারা চোখ খুলেই ঘুমায় আর দিবাস্বপ্ন দেখে। রাজকণ্যা  কাছে গিয়ে শুনতে পেল কে মাছের পেটের  ভেতর থেকে চেঁচাচ্ছে - আমাকে বাঁচাও! সে কিন্তু ভয় পেলো না। তক্ষুনি তলোয়ার দিয়ে মাছের পেট কেটে দিল। পেট থেকে বেরুল একটা রাখাল ছেলে, তার একটা বাছুর, আর একটা বিশাল সওদাগরি নৌকো।

রাজকণ্যা রাখাল ছেলেকে নদীর পারে নিয়ে গিয়ে জানতে পারল যে নদী পার হওয়ার সময় তার বাছুর মাছের খপ্পরে পড়েছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়ে সে নিজেও বিপদে পড়ে। এই রাক্ষুসে মাছের প্রবাদ সে শুনেছিল কিন্তু নদীর ধারে এলে গরুগুলো ভালো খোরাক পায় বলেই সে মাঝে মধ্যে এই দিকে আসত।

গ্রামের লোক অনেকেই নদীর জলে মাছ ধরতে এসে বা তাদের গবাদি পশু চড়াতে এসে নিখোঁজ হয়ে গেছে। অনেকের ভুল ধারণা ছিল যে হয়ত তারা বাঘের খপ্পরে পড়েছে।  রাজকণ্যার এই কথা শুনে খুব দুঃখ হল। গরীব অনাথ ছেলেটার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেবে এই ভেবে দুজন মিলে নদীর ধার ধরে শিবিরের দিকে হাঁটতে লাগল।

রাখাল ছেলের কাছে মেয়ের বীরত্বের কথা শুনে রাজা যারপরনাই খুশি হলেন। রাখাল ছেলেকে ১০০ গোদান করলেন আবার নিজের গলার মুক্তার মালা মেয়েকে দিয়ে বললেন -তুমি আজ অস্ত্রকৌশলে একজন নিরীহের প্রাণ বাঁচিয়েছ। আজ তোমার অস্ত্র শিক্ষা সফল হল!

সেই দেখে রাজপুত্রের মনে হিংসা আরও দ্বিগুন বেড়ে গেল। মনে মনে স্থির করল বোনকে জব্দ করতে হবে।

হায় রে! এত মনোযোগ যদি সে পড়াশুনায় দিত!
*
(to be continued)

No comments: