(This Bengali script will be best viewed in Google Chrome)
আজ 'চোখের বালি' দেখলুম। দেখে মনে হল প্রেম কত তুচ্ছ জিনিস। মানুষ কে কত সামান্য করে দেয় ! আমি অবশ্য চিরকাল বিশ্বাস করে এসেছি যে যেই প্রেম মানুষকে ব্যাথা দেয় , কাতর করে- সে প্রেম ত্যাজ্য। তাকে মাথায় করে স্তুতি করার ভুল করলে সে কালসাপ হয়ে দংশন করে। তার বিষ না পারে কেউ ছাড়াতে , না সেই বিষে কারো মৃত্যু হয়। শুধু অসহ্য বেদনায় আকুল হয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। প্রেমের সেই ভয়ানক রূপ আমার দেখা আছে।
আবার আমি এও জানি যে প্রকৃত ভালবাসা মানুষকে মহান করে তুলতে পারে। তার শত দুর্বলতা সত্বেও তাকে সক্ষম বানাতে পারে। সেই ভালবাসা পরিণয়ের প্রত্যাশী নয়, তাই তাতে প্রতারিত হওয়ার ভয় ও নেই।
কত যুগ ধরে কত মানুষ, বিশ্বের কত জায়গায়, কত ভাষায় এ ভাব ব্যাক্ত করেছে, তাই নতুন করে আমার বলার কিছু নেই। শুধু জানি- যার সন্ধান আমি করেছি চিরজীবন, তার উৎসমুখ আমার কাছেই। নিজেকে ভালো না বাসলে যে অপরকে ভালবাসা যায় না সে কথা গুণী লোকেরা বলে গেছেন বহু কাল আগে।
আর আমি এও জানি যে গোপন প্রেমে কোনো গৌরব নেই, আছে শুধু অপমান। মানুষ যা চায় তা সব সময় পায় না, তাই বলে তাকে অজুহাত বানিয়ে অন্যায় করা দুর্বলতার লক্ষণ, অপরিণত বুদ্ধির পরিচায়ক।
*
বিনোদিনীর মহিমের প্রতি আকর্ষণ হয়ত খুব স্বাভাবিক। বিনোদিনী সুন্দরী, সুশিক্ষিতা, প্রাপ্ত যৌবনা। কিন্তু বিয়ের এক বছর না যেতেই তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। বৈধব্যের সকল ধর্ম পালন সে করেছে। সখের মধ্যে আছে তার একটু চা খাবার বাতিক। কিন্তু ১৯০২-১৯০৫-এর পটভূমিতে এ যেন সামাজিক প্রতিবাদ। সকল বাধার প্রতি এক তীব্র তিরস্কার- ম্লেচ্ছ সাহেবদের প্রিয় পানীয় পান করা। আমরা যখন বিকেলে চা এর কাপটা নিয়ে বসি তখন কি ভাবি এক কালে গল্পের এক নায়িকাকে কত অনুষ্ঠান করে এই পাপবোধটুকু দমন করতে হয়েছে যে সে মনের মত কিছু করতে পারছে।
আজ 'চোখের বালি' দেখলুম। দেখে মনে হল প্রেম কত তুচ্ছ জিনিস। মানুষ কে কত সামান্য করে দেয় ! আমি অবশ্য চিরকাল বিশ্বাস করে এসেছি যে যেই প্রেম মানুষকে ব্যাথা দেয় , কাতর করে- সে প্রেম ত্যাজ্য। তাকে মাথায় করে স্তুতি করার ভুল করলে সে কালসাপ হয়ে দংশন করে। তার বিষ না পারে কেউ ছাড়াতে , না সেই বিষে কারো মৃত্যু হয়। শুধু অসহ্য বেদনায় আকুল হয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। প্রেমের সেই ভয়ানক রূপ আমার দেখা আছে।
আবার আমি এও জানি যে প্রকৃত ভালবাসা মানুষকে মহান করে তুলতে পারে। তার শত দুর্বলতা সত্বেও তাকে সক্ষম বানাতে পারে। সেই ভালবাসা পরিণয়ের প্রত্যাশী নয়, তাই তাতে প্রতারিত হওয়ার ভয় ও নেই।
কত যুগ ধরে কত মানুষ, বিশ্বের কত জায়গায়, কত ভাষায় এ ভাব ব্যাক্ত করেছে, তাই নতুন করে আমার বলার কিছু নেই। শুধু জানি- যার সন্ধান আমি করেছি চিরজীবন, তার উৎসমুখ আমার কাছেই। নিজেকে ভালো না বাসলে যে অপরকে ভালবাসা যায় না সে কথা গুণী লোকেরা বলে গেছেন বহু কাল আগে।
আর আমি এও জানি যে গোপন প্রেমে কোনো গৌরব নেই, আছে শুধু অপমান। মানুষ যা চায় তা সব সময় পায় না, তাই বলে তাকে অজুহাত বানিয়ে অন্যায় করা দুর্বলতার লক্ষণ, অপরিণত বুদ্ধির পরিচায়ক।
*
বিনোদিনীর মহিমের প্রতি আকর্ষণ হয়ত খুব স্বাভাবিক। বিনোদিনী সুন্দরী, সুশিক্ষিতা, প্রাপ্ত যৌবনা। কিন্তু বিয়ের এক বছর না যেতেই তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। বৈধব্যের সকল ধর্ম পালন সে করেছে। সখের মধ্যে আছে তার একটু চা খাবার বাতিক। কিন্তু ১৯০২-১৯০৫-এর পটভূমিতে এ যেন সামাজিক প্রতিবাদ। সকল বাধার প্রতি এক তীব্র তিরস্কার- ম্লেচ্ছ সাহেবদের প্রিয় পানীয় পান করা। আমরা যখন বিকেলে চা এর কাপটা নিয়ে বসি তখন কি ভাবি এক কালে গল্পের এক নায়িকাকে কত অনুষ্ঠান করে এই পাপবোধটুকু দমন করতে হয়েছে যে সে মনের মত কিছু করতে পারছে।
পুরুষ-নারীর মধ্যে বেধাভেদ রবি ঠাকুরের সেই গল্পে শেষ হয়ে যায় নি। আজও বাঙালি ভদ্রসমাজে এক বিপত্নীক বছর না ঘুরতেই (বোধ করি চক্ষু লজ্জার জন্যে) দ্বিতীয় বার বিয়ে করতে পারে; কিন্তু একজন বিধবা যদি একটু সাজতে চায় বা গাঢ় রঙের লিপস্টিক ও লাগায় সেটা নিন্দনীয়। তার অবশ্যই কোন পুরুষবন্ধু আছে যাকে মোহিত করার জন্যে এত সাজ সজ্জার বাহার। মেয়েরা যে নিজেদের জন্যেও সাজতে চাইতে পারে, তা এখনো মহিলারা অনেকেই নিজেরাই বোঝেন না।
বিধবার জীবন হবে চিরভারাক্রান্ত , বিয়োগব্যাথাপূর্ণ এক নির্মম অভিশাপ। যার নিত্য কাজের মধ্যে একাদশি, যার রন্ধন শিল্পে এক ফোঁটা পেয়াজ-রসুনের ছোঁয়াও থাকতে পারবে না- সে যদি কামভারক্লিষ্ট যুবতী হয় তার উপস্থিতিতেও অশুচি হয়।
আমি অবশ্য বিনোদিনীর ছল-কপটতা সমর্থন করি না। আশালতা তার বান্ধবী। স্ত্রী-পুরুষ এর আকর্ষণের সকল অভিকেন্দ্র বলের উর্ধ্যে সেই সম্পর্ক। আশালতার স্বামীর প্রতি তার দুর্বলতা এবং তাকে কাছে আনার সকল কলা কৌশল অভক্ষ্যভক্ষণ ।
No comments:
Post a Comment